yrDJooVjUUVjPPmgydgdYJNMEAXQXw13gYAIRnOQ
Developed by -WST

Contact Form

Name

Email *

Message *

Report Abuse

Total Visitors

Search This Blog

Followers

Followers

No Thumbnail Image

No Thumbnail Image
The best tech blog in Bangladesh and India... Subscribe our newslatter & get pro blogging & seo tips and tricks...

About Us

About Us
The best tech site in bangladesh and india.We discuss of any problem by comment

World Scholar Tech

Made with Love by

Made with Love by
World Scholar Tech

Label

Recently

Popular

Bookmark

স্থান কালের চাদর (LIGO project)






Laser Interferometer Gravitational-wave Observatory -এর সংক্ষিপ্ত রূপ LIGO.

এটি মহাকাশের কোন ঘটনা পর্যবেক্ষণের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। যেখানে মহাকাশের কোন ঘটনায় উদ্ভূত মহাকর্ষীয় তরঙ্গের মাধ্যমে তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। লাইগো সম্পর্কে আলোচনার পূর্বে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সম্পর্কে কিছুটা আলোচনা করা প্রয়োজন। 1915 সালে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সার্বিক তত্ত্বে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করেন।

তিনি বলেন ত্বরনে গতিশীল চার্জ থেকে যেমন তড়িৎ চৌম্বক তরঙ্গ উৎপন্ন হয়। ত্বরনে গতিশীল ভরযুক্ত কোন বস্তু থেকে তেমনি মহাকর্ষীয় তরঙ্গ উৎপন্ন হয়। এ তরঙ্গের দ্রুতি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের দ্রুতির তথা আলোর দ্রুতির সমান। আমরা জানি, স্থান ত্রিমাত্রিক এিমাএিক। আইনস্টাইনের মতে ত্রিমাত্রিক স্থানে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার সাথে সময় যুক্ত হয়ে একটি চতুর্মাত্রিক পর্দা তৈরি করে তাকে বলা হয় স্থান কাল চাদর ( Space Time Continum বা Space Time Fabric).

সমগ্র মহাশূন্য ব্যাপী এই স্থান-কালের চাদর পাতা আছে। মহাশূন্যের কোন স্থানে ভর থাকলে সেখানে এই চাদরে একটি বক্রতা সৃষ্টি হয়। এ থেকেই সৃষ্টি হয় মহাকর্ষ। যখন ভরযুক্ত কনা স্থান-কালের চাদরে ভেসে বেড়ায় তখন বক্রতার প্রভাবও সাথে সাথে চলতে থাকে। আবার যখন দুটি গুড়ুভার বস্তু, যেমন - দুটি কৃষ্ণগহবর বা দুটি নিউটন নক্ষত্র কাছাকাছি চলে আসে তখন একটির বক্রতার সাথে অপরটির বক্রতা আটকে যায় ফলে দুটি বস্তুর কে ঘিরে প্রচন্ড বেগে পাক খেতে থাকে। যাতে করে বস্তুটির ত্বরণ বাড়তে থাকে এবং একসময় তারা প্রচন্ড সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে এক হয়ে যায়।এসময় স্থান-কাল চাদরে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সৃষ্টি হয়।



মহাকর্ষীয় তরঙ্গ আমাদের পরিচিত, অনুপ্রস্থ ও অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ নয়, একটু ভিন্ন ধরনের তরঙ্গ। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে কোয়াড্রুপল তরঙ্গ। এ তরঙ্গ স্থানকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে এবং অনুপ্রস্থ ও অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের মতই মাধ্যমে সংকোচন-প্রসারণ সৃষ্টি করে আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এ তরঙ্গ স্থানের মধ্যে দিয়ে চলার সময় এক দিকের স্থান যদি সংকুচিত করে তবে তার দিকের স্থাকে প্রসারিত করে।

মহাকর্ষীয় তরঙ্গ এত বেশি দুর্বল যে একে শনাক্ত করতে গেলে ঠিক ততটাই সুক্ষ্ম সংবেদনশিল যন্ত্রপাতি দরকার। 1962 সালের দুই সোভিয়েত মিখাইল গার্টসেনস্টেইন ও ভ্লাদিস্লভ পুস্তোভোইত বলেন আলোর ব্যতিচার ধর্ম কে কাজে লাগিয়ে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করা সম্ভব। একই বছর বিজ্ঞানী রেইনার ওয়েইস মাইকেলসন মর্লির অনুরুপ যন্ত্র ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন মহাকর্ষ তরঙ্গ শনাক্ত করতে। প্রথমে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বা ক্যালটেকের গবেষক কিপ থন এর বিরোধিতা করলেও 1968 সালে তিনি প্রথম মহাকর্ষ তরঙ্গ শনাক্তকরণের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।তাকে সহায়তা করে ক্যালটেক। অবশ্য এ পদক্ষেপ সফল হয় নি।

1975 সালে ওয়েইস, কিপ থর্ন ও জার্মান পদার্থবিদ রোনাল্ড ড্রেভার একএে একটি যন্ত্রের পরিকল্পনা করেন। এটি হলো লাইগো। এর অল্প দিনের মধ্যেই ড্রেভার মারা যান। 1992 সালে শুরু হয় লাইগোর নির্মাণ কাজ,প্রথমে ওয়াশিংটনের লিভিংস্টোনে এবং পরের বছর লুজিয়ানার হ্যান্সফোর্ডে। 1997 সালে সারা বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের নিয়ে গড়ে ওঠে লাইগো কোলাবরন প্রকল্প। এ প্রকল্পে প্রায় সহস্রাধিক বিজ্ঞানী কাজ করেছে যাদের মধ্যে ড. সেলিম তালুকদার ও ড. দীপাঙ্কর তালুকদার নামে দুজন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীও আছেন।



লাইগো যন্ত্রে পরস্পর সমকোণে দুটি বাহু থাকবে। মহাকর্ষ তরঙ্গ প্রবাহিত হলে এক বাহুর দৈর্ঘ্য বেড়ে গেলে অন্য বাহুর দৈর্ঘ্য কমবে। পর মুহূর্তে প্রথম বাহুর দৈর্ঘ্য কমলে দ্বিতীয় বাহুর দৈর্ঘ্য বাড়বে। কিন্তু এ সংকোচন-প্রসারণ মাপাও দূরহ কারণ মহাকর্ষীয় তরঙ্গ দুর্বল। তাছাড়া আরো মুশকিল কথা হচ্ছে, স্থান-কালের সংকোচন-প্রসারণের সাথে তা পরিমাপের স্কেলটিও সমান অনুপাতের সংকোচন-প্রসারণ হবে। তাই এমন একটি স্কেল ব্যবহার করতে হবে যার ওপর মহাকর্ষ তরঙ্গের কোনো প্রভাব নেই। একমাত্র আলো যার উপর মহাকর্ষ তরঙ্গের কোনো প্রভাব নেই। তাই তিনি ব্যতিচার পরিমাপক যন্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন।



তার পদ্ধতিতে থাকবে পরস্পর সমকোণে স্থাপিত দুটি নিখুত ভাবে সমান দৈর্ঘ্যের টানেল, প্রত্যেকটি টানেলের শেষ প্রান্তে থাকবে একটি করে প্রতিফলক দর্পণ। প্রতিটি টানেলের দৈর্ঘ্য 4 কিলোমিটার। একটি লেজার রশ্মিকে দুভাগে ভাগ করে দিয়ে টানেলদ্বয় দিয়ে পাঠানো হলে দর্পণে প্রতিফলিত হয়ে আবার পূর্বের স্থানে ফিরে আসবে ফলে পর্দায় ব্যাতিচার পট্রি সৃষ্টি করবে। এখন মহাকর্ষ তরঙ্গের ফলে যখন এক বাহু প্রসারিত এবং অন্য সংকুচিত হবে তখন প্রতিফলিত রশ্মি দুটির মধ্যে পথ পার্থক্য সৃষ্টি হবে ফলে ব্যাতিচার পট্রির সরন ঘটবে।

পট্টির সরন দেখে মহাকর্ষ তরঙ্গের উপস্থিতি বোঝা যাবে। এখন মুশকিল হলো, যন্ত্রটি এত বেশি সুবেদি সাধারণ যে কোন কোম্পন এতে প্রভাব ফেলতে না পারে। এ সমস্যা দূর করার জন্য 4000 কিলোমিটার দূরে ( একটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার লিভিংস্টোনে এবং অপরটি ওয়াশিংটনের হ্যান্সফোর্ডে)
এরূপ দুটি যন্ত্রের স্থাপন করা হলো যাতে একই সময়ে সাধারণ কোন তরঙ্গ উভয়টিতে প্রভাব ফেলতে না পারে। 1992 সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও এর সাহায্যে পর্যবেক্ষণ শুরু হয় 2001 সালে। কিন্তু 2001 সাল থেকে 2010 সাল পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে পর্যবেক্ষণে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়না। যন্ত্রটির বিভিন্ন ত্রুটি সংশোধনের সাথে সংবেদনশীলতা 10 গুণ বাড়িয়ে 2015 সালের সেপ্টেম্বর মাসে পুনরায় চালু করা হয়।



14 ই সেপ্টেম্বর দুই জায়গায়তেই যুগপৎ মহাকর্ষ তরঙ্গ শনাক্ত করা সম্ভব হয়। ধরা পড়ে, 1.3 বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের 29 ও 36 সৌর ভরের দুটি কৃষ্ণবিবরের সংঘর্ষের মাধ্যমে একীভূত হওয়ার দৃশ্য। একীভবনের পর এরা 62 সৌর ভরের একটি কৃষ্ণ গহব্বরে পরিণত হয়। এ ক্ষেত্রে খুব সময়ে 3 সৌর ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে মহাকর্ষ তরঙ্গের সৃষ্টি করে। এই আবিষ্কার থেকে 100 পূর্বের আইনস্টাইনের সার্বিক আপেক্ষিকতা তত্ত্বের মহাকর্ষ তরঙ্গ ও স্থান কাল বক্রতা নিয়ে করা ভবিষ্যদ্বাণী সত্য বলে প্রমাণিত হলো।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, মহাকর্ষ তরঙ্গ শনাক্ত করে শুধুমাত্র আইনস্টাইনের বক্র স্থান কালের ধারণা প্রমাণ করা হলো। কিন্তু বাস্তবে বিজ্ঞানীদের সামনে একটি বিশাল সম্ভাবনার দরজা খুলে গেল। কৃষ্ণবিবর থেকে কোন তড়িৎ চৌম্বক তরঙ্গ বের হতে পারে না, আমরা এতদিন শুধু তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গ কে যোগাযোগের সবচেয়ে ভাল মাধ্যম হিসেবে জানতাম, তাই কৃষ্ণবিবরের ভেতরের ঘটনা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হচ্ছিল না। এখন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে আমরা এর ভিতরের ঘটনা জানতে পারবো বলে আশা করা যায়।

আবার, মহা বিস্ফোরণের পরপরই মহাবিশ্বের ঘনত্ব এত বেশি ছিল যেখান থেকে কোনরকম তড়িৎ চৌম্বক তরঙ্গ বের হতে পারেনি। তাই মহা বিস্ফোরণের ঠিক পরে মহাবিশ্ব কেমন ছিল তার কোন রকম তথ্য পাওয়া যায় না। কিন্তু মহাকর্ষ তরঙ্গের ক্ষেত্রে এ সব সমস্যা নেই একবারে শুরুতে উচ্চ ঘনত্ব যেমন, মহাকর্ষ তরঙ্গ কে আটকে রাখতে পারে নি ঠিক তেমনি কৃষ্ণ গহব্বরের উচ্চ ঘনত্বে এ তরঙ্গকে আটকে রাখতে পারবে না। তাই এ সংক্রান্ত গবেষকদের কাজ অনেকটা সহজ হয়ে গেল। অচিরেই হয়তো আমরা হয়তো জানতে পারব, মহাবিশ্ব জন্মের সময়টা কিভাবে পার করেছে এবং কৃষ্ণবিবরের ভেতরে কী আশ্চর্য ঘটনা ঘটে  চলেছে।

0
0
Post a Comment

Post a Comment

WST
-->